বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৩ পূর্বাহ্ন
এস এল টি তুহিন: পটুয়াখালীতে মামুন প্যাদা নামক এক ব্যবসায়ী প্রকাশ্য দিবালোকে নিখোঁজের তিনদিন পরও খোঁজ মেলেনি। পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে তাকে গুম করার অভিযোগ এনে থানায় সাধারন ডায়েরী এবং পরে আদালতে মামলা দায়ের করা হলেও নিখোঁজ মামুনের এখনো কোন হদিস পায়নি পুলিশ। এ ঘটনায় মামুনের পরিবারে চলছে কান্নার আহাজারি।
দায়েরকৃত আদালতে মামলা ও থানার জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পটুয়াখালী সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের বল্লভ গ্রামের মৃত আবদুল বারেক প্যাদার একমাত্র ছেলে আল মামুন প্যাদা ৫ মার্চ সকালে দোকানের মালামাল ক্রয়ের জন্য বাড়ী থেকে শহরের পুরানবাজার যাওয়ার কথা বলে বের হয়। কিছুক্ষন পরই মামুনের ব্যবহৃত ০১৭১৪৫৪৬২৭৩ মোবাইল নম্বর থেকে তার চাচাত ভাইয়ের স্ত্রী সালেহা বেগমের ০১৭৬২০৭১৫৪৪ ফোনে কল করে জানানো হয় তাকে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে। এরপরই মোবাইলটি বন্ধ পায় সালেহা। বিষয়টি পরিবারের সবাইকে জানালে তারা পুরানবাজার সহ বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকে। ৬ মার্চ দুপুরে জনৈক আফজাল গাজীর ০১৭৬৫৫৪৯৪৫৮ ব্যবহৃত মোবাইল থেকে মামুনের স্ত্রী রুমা আক্তারের ০১৭৫৮০৫২৩১৯ মোবাইলে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপন দাবী করে।
অভিযোগে জানাগেছে, মামুন নিখোঁজের আগের দিন দুর্গাপুর গ্রামের জসিম প্যাদা, মনির হোসেন, জাফর প্যাদা, গোলাম মোস্তফা প্যাদা ও আফজাল গংদের সাথে জমিজমা নিয়ে ঝগড়া বিবাদ হয় মামুনের সাথে। আলমামুন নিখোজের ঘটনায় ওইসব আসামীদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামুনের স্ত্রী রুমা আক্তার জানান, চাচাত ভাইদের সাথে জমিজমার ওয়ারিশ নিয়ে মামুনের সাথে বিরোধ রয়েছে। আসামিরা বেশ কিছুদিন ধরে মামুনকে প্রান নাশের হুমকি দিয়ে আসছিল।
মামুনের মা রেনু বেগম বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর একমাত্র ছেলে মামুনের আয়েই আমি বেঁচে আছি। তার ছেলেকে ফিরে পেতে বারবার বিলাপ যান বৃদ্ধ মা।
নিখোজ মামুনের দুই কন্যাসন্তান তামান্না আক্তার সাম্মি ও নুসরাত জাহান তাসমি জানায়, আমাদের দেখৃভালো করার আর কেউ নেই, বাবাকে গুম করার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার দাবী করে বাবাকে তাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
২৪ ঘন্টার মধ্যে মামুনের খোঁজ না মিললে বল্লভ গ্রামের ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন সহ আন্দোলনের ঘোষনা দেবে বলে জানিয়েছেন।
পটুয়াখালী সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
নিখোজ মামুন পেশায় একজন মুদি মনোহরী ব্যাবসায়ী হলেও কিছুদিন আনসার ব্যাটালিয়নে চাকুরী করেছেন। মামুনের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে পুরো এলাকায় ব্যবসায়ী ও সাধারন মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।